Friday, August 7, 2009

নার্স, আমি ঘুমোইনি-২

নেশায় চুর, কবি ত্রুবাদুর-
এই ছন্দ বুঝবার জন্য আমাকে কখনো স্পেন যেতে হয়নি
আদতে, আমি কেন জানি ফলের রচনা লিখতে পারিনি
ফুলদের সঙ্গেও আমার তেমন সম্পর্ক ভালো না

বাজারের শ্রেষ্ঠ আপেল, দোকানে ঝুলছে
দোকানের শ্রেষ্ঠ আঙুর, কেউ না কেউ কিনছে
আব্বাস শেখের ভাই গাবগাছ শেখ একজন ভালো মানুষ
পচে যাওয়ার থেকে রক্ষা করে দোকানদার তাকে
কলা খেতে দিল, দেখতে ভালোই লাগল

আর ফুল? মৃতের শিয়রে কিংবা বিবাহশয্যায়
কিংবা রাজীব গান্ধীকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের মুহূর্তেও
ফুলের চরিত্র ঠিক বোঝা গেল না- ফুলের কী ক্ষমতা?
জানি, বন্ধুরা তাদের মহত্ব বিকাশে, পজেটিভ ভাবনায় কল্যাণে
এক সেন্ট্রাল মেন্টাল হাসপাতালে আমাকে জোর করে ভর্তি করে গেল
আমাকে প্রচুর ঘুমের ট্যাবলেট গিলতে হচ্ছে,
স্বপ্নের মধ্যে শকুন্তলা করিডোরে ঘুমিয়ে পড়েছে... জঙ্গলের ধারে...
আমাকে প্রচুর লারগকটিল খেতে হচ্ছে, ঘোরের মধ্যে

অ(মল) উঠলে বোলো, সু(ধা) ওকে ভোলেনি;
হয়তোবা এ জীবন কিঞ্চিৎ স্মৃতিচারণার- একদিন
মেডিকেলের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে আমি অনেক গুপ্তভাব
আকারে-ইঙ্গিতে বোঝাতে চেয়েও যথা ব্যর্থ, বোঝাতে পারিনি
আমার কী অসুখ?
যে কারণে আমার সমুদ্রপ্রীতি, যে কারণ আমাকে কন্ট্রোল করে
অফসেট প্রিন্ট দালির ঘড়িটা...

এখন রাত, এখন পাচ্ছি কারো হেঁটে যাওয়ার শব্দ... কে হেঁটে যায়?
গাচ্ছি দু’এক ছত্র রবীন্দ্রনাথ... শুনছি মধ্যরাতের সমস্ত নৈঃশব্দ, চরাচরে

নেশায় চুর আমি ত্রুবাদুর... এই নিরাময় কেন্দ্রে
জানলা খুললেই সমুদ্র, উথাল-পাথাল শব্দ ঢুকে পড়ে
ফলে, নিঃশব্দে আমার পিপাসা, শেষরাতে বাক্য হতে চায়-
হবু বাক্য হামাগুড়ি দিতে দিতে বিড়াল হয়ে কখন যে টেবিলের নিচে চলে যায়
এই বিড়ালও রোগী, শোনো, কেমন মিউমিউ করে বলছে-
নার্স, নার্স, আমি ঘুমোইনি।

No comments:

Post a Comment